December 4, 2024

ভোটে তৃতীয় হয়ে আলোচনায় সাবেক অর্থমন্ত্রীর ভাই গোলাম সারওয়ার

0
সংবাদ শেয়ার করুন

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় মঙ্গলবারের ভোটে হেরে গেছেন টানা তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সারওয়ার। ভোটে তিনি তৃতীয় হয়েছেন। বিজয়ী হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই বাবলু। সারওয়ার কেন তাঁরই ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে পরাজয় বরণ হতে হলো– এ আলোচনাই এখন এলাকার সবার মুখে মুখে।
সারওয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ, লালমাই, নাঙ্গলকোট) আসনের সংসদ সদস্য আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই। এ ছাড়া তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

সারওয়ারপন্থি নেতাদের অনেকেই তাঁর পরাজয় নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তাদের বক্তব্য, মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য হিসেবে সারওয়ারের কাছে কোনো পাত্তাই পেতেন না দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা। তাই এবারের নির্বাচনে তাঁর জন্য এমন পরাজয়ই অপেক্ষা করছিল।

এ আসনে ২০০৮ সাল থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য হন মুস্তফা কামাল। সারওয়ারও কম যাননি। ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বড় কোনো প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা না করেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। একই সময়ে বাবলুও তিনবার ভাইস চেয়ারম্যান হন। দলীয় একাধিক সূত্র বলছে, এবারের নির্বাচনে বাবলু সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিনের সমর্থন নিয়ে মাঠে নামেন। এ সময় নানা কৌশলে বাবলু দলের তৃণমূল এবং অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের গোপন সমর্থন আদায়ে সক্ষম হন। ভোটের মাঠে সারওয়ারের পরাজয়ে এটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। মঙ্গলবারের নির্বাচনে বিজয়ী আব্দুল হাই বাবলু (হেলিকপ্টার) পান ২০ হাজার ৭৬৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আক্তারুজ্জামান রিপন পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৯০ ভোট। সারওয়ার (কাপ-পিরিচ) ১৪ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, তারা নামে মাত্র কমিটিতে আছেন। সাংগঠনিক কাজ সব চলত সভাপতি সারওয়ারের কথায়। সাবেক পরিকল্পনা ও অর্থমন্ত্রীর ভাই হিসেবে গত তিনবার কার্যত ভোট ছাড়াই সারওয়ার বিজয়ী হন। এবারই প্রথম এ উপজেলার মানুষ ভোট দিতে পেরেছে। বাবলুর পক্ষে এমপি বাহারের সমর্থন থাকায় সারওয়ারের দলীয় শক্তি ও অর্থ কাজে লাগেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, সদর দক্ষিণ পরিবারতন্ত্র থেকে মুক্তি পেয়েছে। গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন পর ভোটাররা ভোট দিতে পেরেছে। পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আমরা বাবলু চেয়ারম্যানের পক্ষে নেমে ছিলাম, ফলাফলও পেয়েছি।

সারওয়ারের কাছে পরাজয়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এ ফলাফল আমার কপালে ছিল, এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। গত ১৫ বছরে আমি এমন কোনো দুর্নীতি করিনি যাতে জনপ্রতিনিধি ও ভোটাররা আমার বিপক্ষে যাবেন।’
বিজয়ী বাবলু বলেন, ‘সারওয়ার অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবে ছিলেন। তাই ব্যালটে জবাব দিয়েছে জনগণ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *