December 4, 2024

উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্ধে ১মাস বন্ধ কুবি, সেশনজটের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা

0
সংবাদ শেয়ার করুন

উপাচার্য শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বে প্রায় এক মাস বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য দেওয়া চিঠি প্রত্যাখ্যান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একই সাথে সিন্ডিকেটের গঠন করা দুইটি কমিটির প্রতিও অনাস্থা জানিয়ে আন্দোলনের মাঠে রয়েছে তারা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংকট সহসাই নিরসন হচ্ছেনা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা।
কুমিল্লা বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে উপাচার্য এ এফ এম আব্দুল মঈনের সাথে আলোচনার আহবান জানিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডঃ মোঃ আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মেহেদী হাসান কে রবিবার (২৬মে) দুপুর ১২ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেন রেজিস্ট্রার মোঃ  আমিরুল হক চৌধুরী। গতকাল  মঙ্গলবার (২৮ মে) পযর্ন্ত এ আহব্বানে সাড়া দেননি শিক্ষক সমিতি। তারা কুবি বন্ধের দায় উপাচার্যের উল্লেখ করে আলোচনায় বসতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে সহসাই সমাধানের কোন পথ দেখছেনা শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে হতাশা তারা।
এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডঃ মোঃ আবু তাহের জানান,সিন্ডিকেটকে প্রভাবিত করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছেন উপাচার্য। এখন বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে হবে। খোলার জন্য আমাদের সাথে আলোচনা করার দরকার নাই। যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করেছেন তখন তো কারো সাথে আলোচনা করে করেননি। আর আমরাও উপাচার্যের অপসারণ বা পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনে আছি। এর আগে যখন আমরা আমাদের সাত দফা দাবি পূরণ চেয়েছিলাম তখন তো তিনি আমাদেরকে ডাকেননি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, শিক্ষক সমিতি অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও ক্লাস বর্জনের ঘোষনা দিয়েছিলো। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিলো তাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ব্যাপারে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এখানে আমার কিছু করার সুযোগ নেই। সিন্ডিকেট শিক্ষকদের দাবী দাওয়া ও অনাকাঙ্খিত ঘটনার বিষয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে। ওই তদন্ত কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রনালযের সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টচ্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি রয়েছে। একটি শক্তিশালী কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনেও শিক্ষক সমিতি অনাস্থা দিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষার্থীদের ভাল চায়না, ব্যাক্তিগত সুবিদার জন্য আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার জন্যই আমরা শিক্ষক সমিতির সাথে আলোচনার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম।  তারা সেই চিঠিতে সাড়া দেয়নি। আমরা তাদের সব বিষয়ে আলোচনার জন্য অপেক্ষায় রয়েছি।
এদিকে উপাচার্য শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বে দীর্ঘদিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা। তারা চান, উভয় পক্ষের আন্তরিকতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে খুলে দেয়া হোক বিশ্ববিদ্যালয়।
উল্লেখ্য সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী  গত ১ মে থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।  এর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবি আন্দোলনে একাডেমির সকল কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষকরা।  পরেই এই আন্দোলনের দাবি  এক দফায় গিয়ে ঠেকে, শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনসহ নানান কর্মসূচি পালন করেন। গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্য পন্থী ও শিক্ষক সমিতি’র মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত সমস্যায় সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে গত ১ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *