December 4, 2024

ব্রাহ্মণপাড়ায় তাহের পরিবারের টানা চতুর্থ বিজয়

0
সংবাদ শেয়ার করুন

ব্রাহ্মণপাড়ায় ৫বছরে ৪বার নির্বাচিত হয়েছে একই পরিবারের ৩জন। উপজেল পরিষদের এবারের নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৪৩ হজার ৬৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব অপি। বাবা-চাচার পর এবার তিনি হলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
জানা যায়, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় আওয়ামীলীগের গ্রুপিং দীর্ঘ দিনের। বিশেষ করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গ্রুপিং চাঙ্গা হয়। তৎকালীন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীর সঙ্গে গ্রুপিং সৃষ্টি হয় আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহেরের। তৎকালীন আব্দুল মতিন খসরু সরকারের আইন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় আব্দুল মতিন খসরু আশির্বাদ পান জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী। তৎকালীন আওয়ামীলীগের সভাপতি সৈয়দ আব্দুল কাফি ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। সেই থেকেই আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহের এলাকায় কাজ করেন। সে সময়ের অবহেলিত নেতা কর্মীদের নিয়ে তিনি মাঠে থাকেন। অনেক নেতাই তখন ক্ষুদ্ধ হন। আবু তাহেরের সঙ্গে তারা হাত মেলান। ২০০১ সালের নির্বাচনে ঐ নেতা কর্মীরা নিরব ভূমিকা পালন করেন। সে নির্বাচনে আব্দুল মতিন খসরু পরাজিত হন। তারপর থেকেই ভিন্নভাবে পথচলা জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী ও আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহেরর। দুটি বলয় সৃষ্টি হয়। আব্দুল মতিন খসরু জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীকে সমর্থন দিয়েছিলেন। ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহের অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে থাকতে পারেন নি মামলা জটিলতার কারণে। সে নির্বাচনে আবু তাহেরর সমর্থন পেয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল বারী। সে নির্বাচনে বিজয়ী হন জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী। ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামীলীগের সমর্থনে জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী পুনরায় চেয়ারম্যান হন। সে নির্বাচনে আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু তাহের ৩য় হন। ২০১৯ সালের ২৯ শে মার্চ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুহাম্মদ আবু তাহের জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ঐ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করেছিল। ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আলহাজ্ব মুহাম্মদ ইন্তেকাল করেন। উপ-নির্বাচনে আবু তাহের পুত্র আবু তৈয়ব অপি দলীয় মনোনয়ন চান। সে নির্বাচনে জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর আবু তাহেরের ভাই এম.এ জাহের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাহাঙ্গীর চৌধুরীকে পরাজিত করেন। ২০২৪ সালে আলহাজ্ব এম.এ জাহের উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে কুমিল্লা-৫ বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। সংসদ নির্বাচনের পর একচ্ছত্র আধিপত্ত বিস্তার হয় তাহের গ্রুপের মাঝে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবু তৈয়ব অপি অংশ নেন। এদিকে আওয়ামীলীগ তথা জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীর সমর্থন পান ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরী। নির্বাচনকে ঘিরে তাহের গ্রুপেও গ্রুপিং চাঙ্গা দিয়ে ওঠে। তাহের গ্রুপ থেকে প্রভাবশালী নেতা হাজী জসীম উদ্দিনও প্রার্থী হন। পরবর্তীতে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে অপিকে সমর্থন দেন।
জানা যায়, মোহাম্মদ আবু তৈয়ব অপির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোহরাব খান চৌধুরী আনারস প্রতীক নিয়ে ৩১ হাজার ৪৭০ ভোট পেয়েছেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীকে ২৬ হাজার ১৩০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নাজমুল হাসান শরীফ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো: অপু তালা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৫ হাজার ৫২৬। সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীক নিয়ে ৩৫ হাজার ৪০৬ ভোট পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন তাহমিনা হক পপি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কলসি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৬১৬ ভোট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *