December 4, 2024

মুরাদনগর এখন জাহাঙ্গীর সরকারের নিয়ন্ত্রণে

0
সংবাদ শেয়ার করুন

সংগ্রাম, ত্যাগ, তিতিক্ষার পর মুরদানগরে অবস্থান সুসংঘত করেছে জাহাঙ্গীর আলম সরকারের পরিবার। জাহাঙ্গীর আলম সরকার বর্তমান স্থানীয় সংসদ সদস্য। তার ছেলে ব্যারিস্টার আহসানুল আলম সরকার আবারও তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে মুরাদনগরে একক নিয়ন্ত্রণ চলছে জাহাঙ্গীর আলম সরকার পরিবারের।
জাহাঙ্গীর আলম সরকার মুরাদনগরের রাজনীতিতে বিগত ৫০ বছরের আলোচিত নাম। এ সময় তিনি অনেক রাজনৈতিক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তিনি মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এরশাদ সরকারের আমলে। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তিনি এমপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দীতা করেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। সে নির্বাচনে তিনি ৪৪ হাজার ৭৯৭ ভোট পান। সে নির্বাচনে ৪৬ হাজার ৩৮০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। ১৯৯৬ সালের ১২ ই জুনের নির্বাচনে মুরাদনগরে আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দেওয়া হয় শিল্পপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনকে। আর জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে দেওয়া হয় বিএনপির প্রভাবশালী প্রার্থী এমকে আনোয়ারের সাথে হোমনা আসনে। সে নির্বাচনে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন পরাজিত হয়েছিলেন। ২০০১ সালেও জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে হোমনা আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের নির্বাচনে মুরাদনগরে আবারও দলীয় মনোনয়ন পান জাহাঙ্গীর আলম সরকার। সে নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আলহাজ্ব শাহ মোহাম্মদ কায়কোবাদ বিজয়ী হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয় মহাজোট। সে নির্বাচনে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও জাহাঙ্গীর সরকার পুত্র আহসানুল আলম কিশোর স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করেন। সে নির্বাচনে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের টিকেটে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন বিজয়ী হন। ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর পুত্র আহসানুল আলম কিশোর। ২০২৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাহাঙ্গীর আলম সরকার এমপি নির্বাচিত হন। রাজনীতির এ দীর্ঘ সময়ে অর্থ আর ক্ষমতাসীন হিসেবে পরিচিত ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বিরুদ্ধে রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক সংগ্রাম করতে হয় জাহাঙ্গীর সরকারকে। ২বার আসনও পরিবর্তন করতে হয়। মোকাবিলা করতে হয় দুই শক্তিশালী নেতাকে। এবার এমপি নির্বাচনের পর থেকে মুরাদনগর পুরো নিয়ন্ত্রণে আনেন জাহাঙ্গীর আলম সরকার। শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বিদেশে থাকায় আর নির্বাচনে পরাজয়ের পর ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এলাকায় না আসায় এখন একক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জাহাঙ্গীর আলম সরকার। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তা-ই দেখা গিয়েছে। নিরুত্তাপ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন আহসানুল আলম কিশোর।
এ উপজেলায় ২২টি ইউনিয়নে মোট ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪০ ভোট রয়েছে। ১৯১টি ভোট কেন্দ্রের ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আহসানুল আলম সরকার কিশোর ৮৬ হাজার ৩৭৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম সারোয়ার চিনু ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ১ হাজার ৪০২ ভোট। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে সাহিন টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী ৫৪ হাজার ৬৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডভোকেট ফয়সাল চশমা প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ২২ হাজার ১৭৭ ভোট। উপজেলা সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নুরজাহান মজুমদার হাজার ৫৫ হাজার ৮৩৬ ভোট পেয়ে হাঁস প্রতীকের বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *