রাজনীতিবিদদের জন্য অশনি সংকেত
নিজস্ব রিপোর্ট
উপজেলা নির্বাচনে এমপিদের স্বজন ও তাদের সমর্থিতরাই বিজয়ী হচ্ছেন। কোণঠাসা হয়ে পড়ছে আওয়ামীলীগের নেতারা। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে না থাকায় দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নেতারাই লড়ছেন। সে এক অসম লড়াই। এমপি’র বাহিরে কিছুই হচ্ছে না। এমপি সমর্থিতদের সাথে যতই প্রভাবশালী হোক না কেন কেউ টিকছে না। নির্বাচনের এসব বিষয়ে ইতিহাসবিদ ও গবেষক আহসানুল কবির বলেন, সারা দেশে যদি আমরা নির্বাচনের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই পরিবারতন্ত্রের সিন্দাবাদের ভুত আওয়ামীলীগের উপর প্রবলভাবে জেঁকে বসেছে। সুনামী বা ভূমিকম্প ছাড়া এটি আর দূর হবে বলে মনে হয় না। সামগ্রীকভাবে রাজনৈতিক দুবৃত্তায়ন জবাবদিহিবিহীন রাজনীতি নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ার কারণে এমন এবস্থা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, একটা সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় কর্মী ও জনতুষ্টি বিবেচনা করা হতো। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয় হতো। নিজের পছন্দের বাইরে হলেও জনপ্রিয় সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন কর্মীবান্ধব নেতাকেই নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হতো। কিন্তু এখন সে সংস্কৃতি আর নেই। যাকে মনোনয়ন দিবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন। এখন আর জনতুষ্টি এবং কর্মীতুষ্টির প্রয়োজন হয় না। সংগঠনের ভবিষ্যতও চিন্তা করার প্রয়োজন পড়ে না। এখন সামন্তবাদী সমাজব্যবস্থায় ফিরে যাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়া থেকে সরে না আসলে বড় ধরণের অঘটন ঘটতে পারে।
এবিষয়ে এখন টিভির সিনিয়র সাংবাদিক খালেদ সাইফুল্লাহ তার পর্যবেক্ষণে বলেন, রাজনীতিবিদরা মানুষের কথা বলেন। আর জনপ্রতিনিধিরা প্রান্তজনের কথা বলেন। প্রান্তিক মানুষের না বলা কথাগুলোই তুলে ধরেন একজন জনপ্রতিনিধি। এই প্রান্তিক মানুষগুলো রাজনীতির সাথে পরিচিত নয়। তবে তারা নির্বাচনের সাথে পরিচিত। তারা চান ভালো নেতৃত্ব আসুক। তারা ভোট দিক। তাদের উন্নয়নে তাদের প্রতিনিধিরা কাজ করুক। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে দেখা যাচ্ছে এমপি মন্ত্রীদের পরিবারের সদস্যরাই জনপ্রতিনিধি বিজয়ী করে নিচ্ছেন। এতেকরে মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিন রাজনীতিতে থাকা নেতারা হতাশ হচ্ছেন। এতে করে যারা দীর্ঘদিন যাবত সক্রিয় রাজনীতি করছেন তারা রাজনীতি বিমুখ হয়ে যাবেন। তারা যদি রাজনীতি বিমুখ হয়ে যান তাহলে সাধারণ মানুষও নির্বাচন থেকে আগ্রহ সরিয়ে ফেলবেন। বর্তমানে অনেক রাজনীতিবিদ আছেন যারা ছাত্র রাজনীতি থেকে রাজনীতি করতে করতে শীর্ষ পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি এবং শীর্ষ পদে আসিন হয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে যারা গবেষণা কিংবা অনুসদ্ধান করছেন তারাও এখন হতাশ। বর্তমান নির্বাচন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে।
এবিষয়টি আগামী রাজনীতির জন্য এবং রাজনীতিবিদদের জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য অশনী সংকেত বলে তিনি মনে করেন।