November 23, 2024

ওজন বাড়াতে জোরপূর্বক নল দিয়ে ছাগলকে খাওয়ানো হচ্ছে পানি, ঠকছেন ক্রেতা

0
সংবাদ শেয়ার করুন

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে শেষ পর্যায়ে চলছে গরু, ছাগল ও মহিষ কেনাবেচা। উচ্চবিত্ত পরিবার গরুর পাশাপাশি ছাগল দিয়েও কোরবানী করে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এ সময়ে নিম্নবিত্ত অনেক পরিবারই এবার ছাগল দিয়ে কোরবানী দিচ্ছে। হাটে চাহিদা থাকায় অসাধু বিক্রেতারা ওজন বাড়াতে জোরপূর্বক ছাগলকে নল পানি খাইয়ে মোটাতাজা করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আযহা উপলক্ষে প্রতিদিনই বিকেল বেলায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার তের ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাটবাজারে গরু-ছাগল বিক্রি হচ্ছে। অসাধু ছাগল বিক্রেতারা কোরবানীর হাটের আশ-পাশে আগে থেকে দুপুর বেলায় অবস্থান করে জোরপূর্বক নল দিয়ে ছাগলের মুখে পানি খাওয়ায়ে পেট বড় করে রাখে। এতে ছাগলকে সাময়িক সুন্দর ও তরতাজা দেখায়। ওই ছাগলগুলো সাইজে বড় দেখায় হাটে ক্রেতাদের বেশি পছন্দ হয়। বেশি দামে বিক্রি করে বিক্রেতারা। তবে অনেক সময় ক্রেতারা ছাগল কিনে বাড়িতে নিয়ে গেলে ছাগরের হাছি-কাশি ও সুইয়ে থাকতে দেখে টেনশন পরে যায়। আগামী দিন এ ছাগল বেঁচে থাকবে কি না এ চিন্তায় অনেক ক্রেতা ছাগলকে জবাই করে দেয়। শুক্রবার দুপর থেকে বিকাল পর্যন্ত  উপজেলা বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরে চিত্র দেখা যায়। 
সরেজমিন শুক্রবার বিকেলে একতা বাজারের গরুর হাটে দেখা গেছে, পাশ^বর্তী উপজেলা নাঙ্গলকোট, কচুয়া, সদর দক্ষিণের নোয়াপাড়া ও চৌয়ারা থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন হাটবাজারে ছাগল নিয়ে আসে। কথা হয়, নাঙ্গলকোট থেকে ছাগল নিয়ে আসা ব্যবসায়ী সবুজ ও স্বপনের সাথে। নল দিয়ে পানি খাওয়ায়ে ছাগলের পেট বড় করার কারণ জানতে চাইলে বলেন, পেট খালি থাকলে ছাগল ছোট দেখা যায়। তাই জোর করে পানি খাওয়ায়ে পেট ফুলা করলে ক্রেতা মনে করে, ছাগল স্বাস্থ্যবান। তখন সহজে ছাগল বিক্রি করা যায়।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার হাড়ি সদ্দার বাজারে  ছাগল ক্রয় করতে আসা ৮০ বছরের বৃদ্ধা চৌয়ারার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন বলেন, জোর করে নল দিয়ে পানি খাওয়া এবং স্বাভাবিকভাবে খাওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। জোর করে ছাগলকে পানি খাওয়ালে অনেক সময় মারাও যায়।
ঐতিহ্যবাহী মিরশান্নী হাজী আখন আলী এতিমখানা ও মাদ্রাসা বাজারের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ বলেন, জোরপূর্বক পানি খাওয়ানো ছাগল বাজারে আনতে আমরা বারবার নিষেধ করেছি। এরপরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পানি খাওয়ায়ে ছাগল নিয়ে বাজারে প্রবেশ করে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রাণি সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ নাহিদ হাসান বলেন, ‘বিভিন্ন বাজারে কিছু অসাধু ছাগল ব্যবসায়ী জোর করে নল দিয়ে পানি খাওয়ায়ে বাজারে নেয়, যা সম্পূর্ণ বেআইনী এবং অমানবিক। একটা ছাগল বা পশু যার প্রাণ আছে, তাকে যদি আমরা জোরপূর্বক কোন কিছু খাওয়াই-এর কিছু পরিমাণ শ^াসনালীতে প্রবেশ করে নিমোনিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে ছাগলের প্রাণ হানি ঘটে। এ সময় যদি কোন খামারী এ ছাগলটি ক্রয় করে, তাহলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে। সুতরাং, বাজারে গিয়ে ক্রেতাদের উচিত বেশি সুন্দর ও পেট ফুলা ছাগল ক্রয় থেকে বিরত থাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *