বাংলাদেশী জহিরের প্রেমে হাবুডুবু মালদ্বীপের সাই
চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি
জহির হোসেন(৩৫)। দশ বছর যাবৎ মালদ্বীপের রাজধানী মালে এসি ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছেন। গত দুই বছর আগে তাঁর প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার মাঝে পরিচয় হয় মালদ্বীপ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্লাইট অপারেশন ম্যানেজার সাই(৩২) এর সাথে। ইলেকট্রনিক্স পণ্য ক্রয়ের সুবাধে বিভিন্ন সময় জহির হোসেনের সাথে সাইয়ের সাক্ষাত হতো। পরবর্তীতে সাই নিজেই জহির হোসেনের মোবাইল নাম্বারে নিয়ে প্রায় সময় যোগাযোগ করতো। এরই মাঝে দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। অবসর সময়ে দু’জনে মালদ্বীপের বিভিন্ন পার্কে ঘুরতে যেতো। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি সাই তার পরিবারকে জানায়। পরিবার খোঁজ-খবর নিয়ে কিছুদিন অতিবাহিত করে। পরে পরিবার মেয়ে সাই এর পছন্দকে অগ্রাধিকার দিয়ে ছেলে ব্যবসায়ী জহির হোসেনকে বাসায় আমন্ত্রণ জানায়। সেখানে সাই এর পিতা-মাতা জহির হোসেনের সাথে পরিচয় হয় এবং খোঁজ-খবর নেয়। সাই-এর পরিবার ব্যবসায়ী জহির হোসেনকে জিজ্ঞেস করে-আমার মেয়ে তোমাকে পছন্দ করেছে বিয়ে করতে চায়, তুমি রাজি কি না। জবাবে জহির হোসেন এক বাক্যে রাজি বলে দিয়েছে। সেই সিদ্ধান্তে প্রেমের সম্পর্ক পরিণত হয় প্রণয়ে। ১৬ জুন রোববার মালদ্বীপের রাজধানী মালে অটোবি কমিউনিটি সেন্টারে সাই- এর পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতিতে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক ৪ হাজার রুপি দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। ১৯ জুন বুধবার তারা দু’জনে মালদ্বীপ থেকে ঢাকায় পৌছেন। জহির হোসেন তাঁর মা-বাবাকে খুশি করার জন্য দীর্ঘ ১০ বছর পর ২০ জুন বৃহস্পতিবার বিদেশী নবধুকে নিয়ে হেলিকপ্টরযোগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাদৈর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন। জহির পাশ^বর্তী সাতবাড়িয়া গ্রামের মাহবুব আলম তৃতীয় ছেলে। বিদেশী নববধু ও ব্যবসায়ী জহির হোসেন হেলিকপ্টারে আসছেন এমন খবরে আশ-পাশের উৎসুক জনতা কাদৈর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভীড় করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর জহির হোসেন নববধু সাই-কে নিয়ে প্রাইভেটকারে করে নিজ বাড়িতে উপস্থিত হলে আশ-পাশের নারীরা বিদেশী নববধুকে একনজর দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। নববধুর আগমন উপলক্ষে ২১ জুন শুক্রবার উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে সামিয়ানা টাঙিয়ে বিশাল প্যান্ডেল করে বৌ-ভাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও নববধুকে দেখার জন্য আগত অতিথি নারী-পুরুষরা নববুধকে এক পলক দেখতে ভীড় জমায়। ব্যবসায়ী জহির হোসেনও প্যান্ডেলে খাওয়ার সময় আগত অতিথিদেরকে নববধু সাই-কে পরিচয় করে দেন।
ব্যবসায়ী জহির হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মালদ্বীপে এসি-ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা পরিচালনা করছি। সেখানে গত দুই বছর আগে পরিচয় হয় মালদ্বীপের নাগরিক সাই-য়ের সাথে। এক পর্যায়ে দু’জনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়েতে আমার বাবা-মায়ের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনরাও খুশি।
নববধু সাই বলেন, বাংলাদেশ সুন্দর একটি দেশ। আমার স্বামী জহির খুবই ভালো এবং তার বাবা-মাও ভালো।