December 4, 2024

কুমিল্লায় বাহার ও মেয়ে সূচনাসহ ২২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

0
সংবাদ শেয়ার করুন

কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক এমপি হাজী আ ক ম বাহা উদ্দিন বাহার ও তার জ্যৈষ্ঠ কন্যা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনার বিরুদ্ধে এবার কুমিল্লায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাতে এ মামলাটি দায়ের করেন নগরীর দক্ষিণ চর্থা (তালতলা) এলাকার কাশেম মিয়ার ছেলে ছোটন মিয়া।

মামলায় এজাহারনামীয় ২২৫ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী সমর্থক। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন। 

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, কুমিল্লায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকালে নগরীর দক্ষিণ চর্থা (তালতলা) এলাকা থেকে মামলার বাদীসহ অর্ধশতাধিক ছাত্র জনতা মিছিল নিয়ে নগরীর কান্দিরপাড় আসছিল। এ সময় মামলার প্রধান আসামি সাবেক এমপি বাহার ও তার মেয়ে ডা. সূচনার ( সাবেক মেয়র) নির্দেশে বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে মামলার অন্যান্য আসামিরা হামলা এবং গুলি চালায়। এসময় গুলি, পিটিয়ে ও কুপিয়ে অনেক কে আহত করা হয়। মামলায় এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আহাম্মেদ নিয়াজ পাভেল, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা  জহিরুল ইসলাম রিন্টু, সিটি কাউন্সিলর হাবিবুল আল আমিন সাদী,সরকার মাহমুদ জাবেদ, আবদুস ছাত্তার, সৈয়দ রায়হান আহাম্মদ, আবুল হাসান, কাউছারা বেগম সুমী, সাবেক কাউন্সিলর শাহ আলম খান, ইউপি চেয়ারম্যান হাসান বাপ্পি রাফি, মোজাম্মেল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদসহ ২২৫ জন এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
 
রাতে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন সমকালকে বলেন, ‘যাদের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে সরকার পতনের পর তাদের কেউই অনেকেই এখন এলাকায় নেই। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’ 

এর আগে গত রোববার রাতে সাবেক ওই এমপি ও তার কন্যা ডা. সূচনাসহ ৬২ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মাছুম মিয়া নামের এক হোটেল কর্মচারীকে গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়।

গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা নগরীতে সাবেক এমপি বাহারের বাস ভবন, তার মালিকানাধীন সোনালী স্কয়ার মার্কেট ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুটপাট চালায়। তিনি ২০০৮ সাল থেকে টানা চার বার নৌকার মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন। অপর দিকে তার জ্যৈষ্ঠ কন্যা ডা. সূচনা চলতি বছরের ৯ মার্চ উপনির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। সোমবার সরকারী এক প্রজ্ঞাপনে ডা. সূচনা মেয়র পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন। বর্তমানে বাহার এবং তাঁর কন্যা ডা.সূচনা দেশেই আছেন, নাকি দেশ ছেড়েছেন, এ বিষয়ে নিশ্চিত কেউ তথ্য দিতে পারেনি। যদিও অনেকেই বলছেন স্বপরিবারে বাহার ভারতে অবস্থান করছেন। তবে এ তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই আত্মগোপনে এবং কেউ কেউ দেশ ছেড়েছেন। তাই মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় মামলার বিষয়ে কারও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *