May 22, 2025

ভিক্টোরিয়ার নজরুল হলে স্বৈরাচার নামে গরু জবাই

0
সংবাদ শেয়ার করুন

ভিক্টোরিয়া কলেজে প্রতিনিধ

।। মঙ্গবার (২০ মে) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের একমাত্র আবাসিক হল, নজরুল হলে সম্প্রতি এক ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে অনাবিল আনন্দ আর প্রাণের স্পন্দন। একটি গরু আনাকে কেন্দ্র করে হল প্রাঙ্গণ পরিণত হয়েছে এক উৎসবের আমেজ, যা কলেজের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছে। দুপুরে নজরুল হলে শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য একটি গরু আনা হয়। আর এই গরুর আগমনই যেন উৎসবের সূচনা করে। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে গরুকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়, যা ছিল এক আবেগঘন মুহূর্ত। এরপর তাদের উচ্ছ্বাস রূপ নেয় এক স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ মিছিলে। মিছিলটি নজরুল হল থেকে শুরু হয়ে কলেজের প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ করে। শিক্ষার্থীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। বিশেষ করে, ছেলেদের এই আনন্দ মিছিল নবাব ফয়জুন্নেসা হলের (মেয়েদের আবাসিক হল) সামনে গিয়েও বিভিন্ন স্লোগান দেয়, যা এই আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তোলে।চলতি মাসের মিল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল কাহহার। তিনি ইনকিলাবকে জানান, এই আয়োজনে নিজেকে “অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত” বলে জানান। তার কাছে এটি কেবল একটি দায়িত্ব নয়, বরং সহপাঠীদের সেবার এক “বড় সুযোগ”। শিক্ষার্থীদের খাবারের ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ ও অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি গরু আনতে পারার বিষয়টিকে “খুবই আবেগময়” বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, হল প্রশাসন ও বন্ধুদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যারা সরাসরি ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন। এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনের স্মরণীয় একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে।”নজরুল হলের সিনিয়র মাস্টার্সের (বিদায়ী) শিক্ষার্থী মো. তুষার আহমেদ জানান, এই ঘটনা হলের পুরনো ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, একসময় সিনিয়র ভাইয়েরা হলে গরু আনতেন, যা হলের একটি ঐতিহ্য ছিল। বর্তমান ম্যাস কমিটির এই উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানান।গণিত চতুর্থ বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সাইদুর রহমান শাওন বলেন, তিনি প্রায় পাঁচ বছর এই হলে আছেন, কিন্তু এর আগে কোনো ম্যাস কমিটিকে আস্ত গরু আনতে দেখেননি। তার মতে, আজকের এই আয়োজন এক বিরল ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, এবং তিনি আশা করেন ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।ভিক্টোরিয়া কলেজের দ্বিমাসিক পত্রিকা ‘ক্যাম্পাস বার্তা’র নির্বাহী সম্পাদক মো. আরমান হোসেন এই আয়োজনে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন। তিনি বলেন, আজ কবি নজরুল হলে ‘স্বৈরাচার’ নামের গরুটি জবাই হবে, যা এক অন্যরকম অনুভূতি। তার মতে, এটি নজরুল হলের সকল শিক্ষার্থীর আনন্দ এবং স্বৈরাচার ছাত্রলীগের প্রতি প্রতীকী প্রতিবাদে’র মিলনও হবে। সব মিলিয়ে হল জীবনে এটি একটি স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।এই আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে নজরুল হল যেন আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে, যা শিক্ষার্থীদের মনে এক গভীর আনন্দের রেশ ফেলে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *