কুমিল্লা-৯ আসন বিএনপিতে বাড়ছে প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লা-৯ লাকসাম-মনোহরগঞ্জ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী বাড়ছেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে আসছে হেভিওয়েট প্রার্থীদের নামও। সাবেক এমপি কর্নেল অব. আনোয়ারুল আজিম ইন্তেকাল করলেও তার কন্যা সামিরা আজিম দোলা এখন আলোচনায়। মানুষের আগ্রহও তার দিকে।
তবে এ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী হচ্ছেন শিল্পপতি আবুল কালাম। এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। তবে কালাম বিরোধী মোর্চাও তৈরি হচ্ছে। জামায়াতের প্রার্থী অনেকটাই নিশ্চিত চুড়ান্ত। অপরদিকে এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাঠে রয়েছে। এনসিপি’র প্রার্থী সরাসরি মাঠে না আসলেও আলোচনায় রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদের নামও।
বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছেন কিন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম। সামিরা আজিম দোলাও এলাকায় আসছেন। অন্য প্রার্থীরা সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। অপর দিকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সাকেব উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ড. সারোয়ার সিদ্দিকীকে। সম্প্রতি জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার লাকসামে একটি কর্মীসভায় আনুষ্ঠানিক প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন।
২০০১ সালে এবিএনপির প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন কর্ণেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম। তিনি ওই নির্বাচনে ভোট পান ১ লাখ ৭ হাজার ৭৬৯, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের তাজুল ইসলাম পান ৭০ হাজার ৪৪৩ ভোট। ২০০৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের তাজুল ইসলাম পান ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৮ ভোট, অপর দিকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কর্ণেল (অব.) আয়োরুল আজিম পান ১ লাখ ১৭ হাজার ২৯০ ভোট। ওই নির্বাচনে বিএনপির কালাম সমর্থিতরা আওয়ামীলীগের পক্ষে কাজ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের তাজুল ইসলাম নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পর কর্ণেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম। ওই আসনে কর্ণেল (অব.) ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তা সত্তের সাংগঠনিক সকল কমিটি আবুল কালামকে দেয়া হয়। আবুল কালাম সাংগঠনিক তৎপরাতা তোপের মুখে পড়েন প্রায়শই। এছাড়া গত ১৫ বছর তাজুল ইসলাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় লাকসাম-মনোহরগঞ্জ এলাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন।
ইউপি নির্বাচন থেকে শুরু করে সকল জনপ্রতিনিধি পাশ করিয়ে নেন। এই সময়ে বিএনপির দুই জন জনপ্রিয় নেতা সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন কবির পাভেজকে গুম করা হয়। ৫ আগস্ট পরবর্তী সমেয়ে তাজুল ইসলামসহ আওয়ামীলীগের নেতারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বিএনপি মাঠে অবস্থান নেয়। ভোটের মাঠে আনোয়ারুল আজিমের অবস্থা ভাল হলেও তিনি আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। এতে তার নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছাড়া নেমে আসে। বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে সমাপ্ত করেছেন। ইতোমধ্যে উপজেলা সম্মেলনের কাজ চলছে।
এদিকে আজিম সমর্থিত নেতাকর্মীরাও তার কন্যা সামিরা আজিম দোলাকে নিয়ে মাঠে নেমেছে। দোলা কিংবা অন্যকোন প্রার্থী নিয়ে এলাকায় তৎপরতা চালাবেন। আবুল কালাম ছাড়াও আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় এবং মাঠে রয়েছেন সামিরা আজিম দোলা, শিল্পপতি ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী, সাবেক সচিব এ কে এম জাহাঙ্গীর, শিল্পপতি মোবারক উল্লাহ মজুমদার, জি.এম ফারুক স্বপন। এছাড়াও ভোটের মাঠে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তরুণ নেতা ডা. রাকিব আল হাসান ও সাংবাদিক সফিকুর রহমান সফিক। বিএনপির কোন্দলকে কাজে লাগাতে চান জামায়াত। জামায়াতের প্রার্থী ড. সরওয়ার সিদ্দিকী এলাকায় গণসংযোগ করছেন। কেন্দ্র কমিটি সম্পন্ন করেছেন। এদিকে নতুন দল এনসিপির প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ। ভোটের মাঠে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সেলিম মাহমুদও।