September 29, 2024
সংবাদ শেয়ার করুন

এবারের দাবী কি। আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রেখে। সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা। কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না মিললে শূন্য পদগুলোতে মেধায় নিয়োগ এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
কোটা পুর্নবহাল ইস্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তুমুল আলোচনা চলছে। পক্ষ-বিপক্ষ বেশ সরব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলনের একজন সংগঠকের ভাষ্য, তারা ভেবে ছিলেন কোটা ব্যবস্থা ইতিমধ্যে মীমাংসিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আদালতের রায়ে তাদের সেই ভুল ভেঙেছে। আবার কেউ কেউ এটির প্রচলন ও বাতিল প্রক্রিয়ার মধ্যেই গলদ দেখছেন। কারণ ২০১৮ এর আন্দোলনে সংস্কার চাওয়া হয়েছিল, ৫৬ ভাগ কোটার মধ্যে যে ৩০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ সেটিকে ১০ ভাগে নামিয়ে আনতে, বাতিল নয়। কিন্তু সরকার বাতিল করেছিল। কী করলে ভালো হতো, তা তো আর এখন বলে লাভ নেই।
আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, এটা কোন দলের নয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। একজন নারী শিক্ষার্থীর ভাষ্য, নারী কোটা রাখলে ছেলেদের পিছিয়ে দেয়া হয়। সহকর্মী কোটাসুবিধার, পরবর্তীতে তাকে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।  এতে যোগ্যতা কম, যায় উঁচু পদে। সংবিধানে স্বাধীনতা, সাম্যের যে স্পিরিট তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এতে বৈষম্য বাড়ছে। মেধার অবমূল্যায়ন হচ্ছে, বিকশিত হওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে।
কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে দেয়া উচিত নাকি এটাকে কমিয়ে আনা উচিত। প্রয়াত সাবেক আমলা ড.

Mobarak Hossain, [7/9/2024 7:44 AM]
আকবর আলি খান বলেছিলেন, বাংলাদেশ সরকার তিনটি পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্মস কমিশন গঠন করেছিল। তিনটি কমিশনই সুস্পষ্ট ভাবে বলেছে কোটা একেবারে তুলে দেয়া উচিত। তবে তার মন্তব্য ছিল হঠাৎ করে কোটা ব্যবস্থা তুলে দিলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে নারী ও উপজাতি কোটা পুরোপুরি তুলে দেয়া ঠিক হবে না। প্রতি পাঁচ বছর পর কোটা ব্যবস্থার মূল্যায়ন করা উচিত বলেও তার মন্তব্য ছিল। কোটা ব্যবস্থার কারণে অনেক মেধাবী প্রার্থীরা চাকরির পরীক্ষা দিতে রাজী হয় না। তিনি আরও বলেছিলেন, কোটার অন্যান্য বিকল্পও আছে। তবে এসব পরামর্শ ২০১৮ এর সময়েও সরকার আমলে নেয় নি।
আবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ৬০ ভাগ নারী কোটা রয়েছে। এরপরও নাকি পুরুষ শিক্ষক বেশি। এখানে কোটা না থাকলে কি ঘটতো।
কুমিল্লায় শিক্ষিত বেশি। তারা অন্যান্য কোটার পাশাপাশি জেলা কোটার শিকার। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কোটা বাতিলের দাবী উঠেছে। ১৯৮৯ সালে সাংগঠনিক ভাবে দাবী জোরালো হয়েছিল একবার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নূরুল ইসলামের মন্তব্য, মুক্তিযোদ্ধার ছেলে পর্যন্ত কোটা মানা যায়। ওয়ারিশওতো বাপেরটা ছেলে-মেয়েরা পায়। দাদার কাছ থেকে নাতিরা পায় না। তার মতে,  প্রকৃতপক্ষে কোটা থাকা উচিত শুধু প্রতিবন্ধীদের জন্য। সাবেক আমলা মুক্তিযোদ্ধা একেএম আব্দুল আউয়াল মজুমদারের ভাষ্য, এখনকার বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ছাড়া আর কোন কোটাই থাকা উচিত নয়। সরকারি চাকরির ৯৫ ভাগই মেধাভিত্তিক হওয়া দরকার। তার মতে, কোটা তুলে দিলে সরকারি চাকরিতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্যও দূর হয়ে যাবে।
পরিচিতিঃ সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *